তুলসীদাস! মধ্যযুগের ভারতীয় সাহিত্যে এই ব্যক্তি এক বিতর্কিত অধ্যায়। ষোড়শ শতকের সমগ্ৰ মধ্যভাগ জুড়ে যে সাধক তুলসীদাসের পরিচয় আমরা পাই তা মূলত ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবনার ধারক ও বাহক। কিন্তু তন্নতন্ন করে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় সপ্তদশ শতকের প্রথমভাগে তাঁর লেখনীতে প্রতিফলিত হয়েছে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরোধিতা। তবে কি সাধকের ব্রহ্মতপস্যার পরিবর্তে তিনি গ্রহণ করেছিলেন সমাজসংস্কারকের পথ? ছয় শতাধিক দোঁহার সমুদ্র থেকে নিঙড়ে বের করে আনা নব্বইটি দোঁহার রচনা, কথনশৈলী তথা উদ্দেশ্য কিন্তু সেই ইঙ্গিত অতি স্পষ্টভাবে বহন করে। তথাকথিত সাধক থেকে সমাজবাদী তুলসীদাস হয়ে ওঠার যাত্রাপথে হয়তো এক-একটি আতপ্ত চুল্লির ভূমিকা নিয়েছিল এই দোঁহাগুলি। নানান হয়ে ওঠা এবং না হয়ে ওঠার সন্ধান দেয় এই দোঁহাবলি ও তাদের মর্মকথন। অনুবাদক সেই বিতর্কিত খোলস ভেঙে মূল তুলে দিলেন পাঠকের হাতে, বিচার ও বিশ্লেষণের দায়িত্ব এখন তাঁদের।
