মোমো-র গল্পটি ছোটদের জন্যই লেখা, না কি বড়দের জন্যেও তা ভাববার বিষয়। কিশোর-কিশোরীরা নিশ্চয়ই এর স্বাদ ও রস উপভোগ করবে কারণ কাহিনীর মূল গায়েন এইবয়সী ছেলেমেয়েরাই। কিন্তু গল্পটির নতুন নতুন বাঁকে যে বিস্ময়, তা নিঃসন্দেহে বড়দেরও আকর্ষণ করবে। এ কাহিনীর বিশেষ এক চরিত্র হচ্ছে ‘সময়’। ‘পৃথিবীর অন্যতম একটি রহস্য হ’ল সময়। সক্কলে জানি সময়-এর কথা। কখনো কখনো নীতিকথায় এর মূল্য সম্বন্ধে গল্পচ্ছলে উপদেশও দেওয়া হয়; ব্যস্, তারপরেই সবাই ভুলে যাই অন্য কথায়, অন্য কাজে। আমরা ধরেই নিই “আমরা আছি”, যদিও জানি না কতক্ষণ, কতদিন, এটাই বিস্ময়’। লেখক যেমনটি বলছেন, সত্যিই সেইরকম ভাবা যায়— এই কাহিনী ইতিমধ্যে ঘটে যেতেও পারে, আবার ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। অর্থাৎ এ ঘটনা অনেকাংশে আমাদের পরিচিত ও প্রাসঙ্গিক। বছর দশেক-এর মেয়ে মোমো। শহরতলির বসতির পাশে মান্ধাতা আমলের একটি ভাঙাচোরা নাটমঞ্চে মোমোর আস্তানা। তার অনেক বন্ধু— সমবয়সী ও অ-সমবয়সী মানুষজন, পাখি-পোকা, গাছপালা, পাথর-মাটি, রোদ-বৃষ্টি, সুর-তাল। আর এক নতুন বন্ধু সে পেল, নাম তার কশ্যপী, একটি কচ্ছপ। সে যা বলতে চায়, তা ওর খোলার উপর হাল্কা আলোর মধ্যে লেখায় ফুটে ওঠে। আর আছে একদল ধূসর-মানুষ, যারা মানুষের ভালো চায় না। কশ্যপী এবং এক সংবেদনশীল ও রহস্যময় অধ্যাপকের সাহায্যে ছোট্ট মেয়ে মোমো এক ভয়ানক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করল। এ তারই কাহিনী।
