নীল আকাশের পেঁজাতুলো মেঘ এসে নামে নদীচরের কাশবনে। রাত্রির গোপনকান্না বুকে নিয়ে সকালবেলার আলোয় শিশুর মতো খুশি মাখে দূর্বাঘাস। শিউলিতলা থেকে কোনো স্নিগ্ধ কিশোরী মুঠো ভরে কুড়িয়ে নেয় সেই অপার্থিব আলোফুল। আর এমনই এক আশ্বিনের আশ্চর্য শারদপ্রাতে বেতার- বাহিত হয়ে বাঙালি জীবনে আবির্ভূত হয় ‘বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভোর’। দুর্গোৎসব, শারদপ্রকৃতি আর মহালয়ার ভোরে রেডিয়োর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠান বাঙালি চেতনায় একাকার হয়ে গেছে গত নব্বই বছরে। বাঙালির স্মৃতি ও সত্তার সঙ্গে ওতপ্রোত সেই বাৎসরিক শারদ শ্রুতি-উদ্যাপনকে সম্ভবত এই প্রথম তন্নিষ্ঠ গবেষণায় দুমলাটে ধরে রাখার চেষ্টা করা হল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভোর: আলেখ্য অন্তরে আলেখ্যের অন্দরে বইটিতে। এই বইয়ের একটি স্তরে বয়ে চলে তিরতিরে স্মৃতি। তার নির্মল প্রবাহ অব্যাহত রেখে লেখক কখনো গভীর অবগাহনে যান শাস্ত্রে, কখনো নিবিড় আশ্লেষে উন্মোচন করেন আকাশবাণী-কেন্দ্রিক বাংলা সংস্কৃতির নানা সংকেত। প্রস্তুত করেন মহিষাসুরমর্দিনীর দু-দুটি পাঠের মান্যরূপ ও তাদের পারস্পরিক তুলনা। প্রায় শতবর্ষস্পর্শী রেডিয়োর ‘মহালয়া’ অনুষ্ঠান নিয়ে লেখকের ব্যক্তিগত আবেগ আর বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার সাবলীল সম্মিলন এই বই।
