‘অসমাপ্ত স্বকলম (প্রথম খন্ড) নাট্য সংরক্ষক আশিস গোস্বামী-র গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোকে এক জায়গায় রাখার প্রথম প্রচেষ্টা। প্রধানত চারটি শিরোনামে লেখাগুলো সাজানো। প্রথম অংশে তাপস সেন সম্পর্কে সুনিবিড় কিছু রচনা পাই। ব্যক্তি তাপস সেন ও শিল্পী তাপস সেন দুইটি দিকই মূর্ত হয় আশিস গোস্বামীর খুব কাছ থেকে দেখা এই লেখাগুলিতে। নাট্যালয় ও নাট্যজন অংশে রবিঠাকুরের অভিনয় ও প্রকরণ নিয়ে, এমনকি পোষাক নিয়েও যে কতো ভাবনা ছিল, তা আলোচনা করেছেন আশিস গোস্বামী । এখানেই পেলাম বেশ কিছু থিয়েটারের মানুষের কথা।
এখানে রয়েছে বাংলাদেশের থিয়েটার বিষয়ে লেখকের রচনার সমাহার। এই অংশটিতে যে তথ্য ও চকিত বিশ্লেষণের অনুপুঙ্খ সালতামামি আছে তা যে দীর্ঘদিনের একনিষ্ঠ পরিশ্রমের ফল তাতে সন্দেহ নেই। প্রগাঢ় থিয়েটারপ্রীতি ব্যতীত এই শ্রম স্বীকার সম্ভব নয়। আরেক বাংলার নাটকের দল, নাটককার, নির্দেশক এই সকল দিকগুলি নিয়েই একটি বড় দলিল রচনা করেছেন তিনি। নাগরিক, ঢাকা থিয়েটার, আরণ্যক, বহুবচন, থিয়েটার, চট্টগ্রামের থিয়েটার ৭৩ সহ অসংখ্য থিয়েটার সংস্থার নির্মাণের নির্ঘন্ট পেশ করেছেন। মুনীর চৌধুরী, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, সিকন্দর আবু জাফর, সেলিম আল দীন, মামুনুর রশীদ, আবদুল্লাহ আল মামুন, সৈয়দ শামসুল হক এবং আরো অনেক অনেক নাটককারের কথা উঠে এসেছে এই আলোচনায়। আর আছে গুরুত্বপূর্ণ অনুবাদ।
‘আশিস গোস্বামী একটি বহমান নদীর ধারাকে লিপিবদ্ধ করতে চান যাতে নূতন সময়ের বাঁকে কোন উৎসাহী জন এমনিতরো কোন কাজে উৎসাহিত হন, ইনি চান আলোচনার গোড়াপত্তনটুকু অন্তত হোক, এই আশা নিয়ে যে কেউ না কেউ এই পরিশ্রমসাধ্য আয়াসের মশাল বহন করতে এগিয়ে আসবে’।
এই স্মিতহাস্য মানুষটি যে তথ্যসমৃদ্ধ রচনা আর তার চিহ্ন বোঝা যাবে এই বইটির প্রথম ও আগামী খণ্ডগুলিতে। প্রথম খন্ডের সাফল্য এবং চাহিদা পরবর্তী খন্ডগুলির প্রকাশ ত্বরান্বিত করবে নিশ্চিত।